ঘেরাটোপ (পর্ব-৪)

  • 06 June, 2024
  • 0 Comment(s)
  • 191 view(s)
  • লিখেছেন : অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
মিহিরের পরনে সেই এক পোশাক। যে পোশাকে গতকাল সুবর্ণেরা তাকে দেখেছিল। কেবল তার হাতে চায়ের ফ্লাস্কটুকুই এখন আর দেখা যাচ্ছে না। গোটানো ফুলপ্যান্ট এখন নামানো অবস্থায়। পরিবর্তন বলতে এই। সে আবারও জিজ্ঞেস করে, “লাগেনি তো আপনার?” সুবর্ণ ঘাড় নাড়ে। “তেমন কিছু না, এবারে আমার কথার জবাব দাও,” মিহির ঘাড় নীচু করে দাঁড়ায়। “তখন শোভনদা, সুনীলদারা বেরচ্ছিল সবাই। আপনার সাথে আমাকে দেখলে গণ্ডগোল হতে পারত।” (ধারাবাহিক রচনা, পর্ব- ৪)

[৪]

 

একঝলক হলেও সুবর্ণের মনে হয়েছিল হাতের মালিক কিছু বলতে চায়। কিন্তু পলকের মধ্যেই সে এক ঝটকায় জোরের সঙ্গে তার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে এক দৌড়ে সুবর্ণকে টপকিয়ে অন্যদিকে ছুটতে শুরু করল। সুবর্ণের সেই ঝটকা সামলানোর প্রস্তুতি ছিল না। তাই সেই বরং খানিকটা বেসামাল হয়ে দেওয়ালে ঠেস দিয়ে হেলে পড়ল। তাকিয়ে দেখল চেনা অবয়বটা ভিড়ের মধ্যে মিশে যাচ্ছে। সুবর্ণ নতুন করে তার পিছনে ছুটতে চেষ্টা করল না। তার বাম কনুইয়ের নীচটা একটু ঘষটিয়ে গেছে। জ্বালা করছে। কিন্তু কেন জানিনা তার মনে হল ছোটবার প্রয়োজন হবে না। সে তাই হাত উলটিয়ে চোট লাগা কনুইটা দেখতে চেষ্টা করল।

 

-“লাগল নাকি?” সুবর্ণ চকিতে ঘুরে তাকায়।

-“একটু বেসামাল হয়ে গেলেন দেখলাম,” অফিসার সুদীপ সেনগুপ্ত সরাসরি কথা বলেন।

-“না না, সেরকম কিছু না। ওই একটু – আসলে একজনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গিয়েছিল হঠাৎ,” সুবর্ণ কোনওমতে পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করে। সুদীপ তাতে গুরুত্ব দেন না একেবারেই।

-“ওহ, তাই বুঝি? তাহলে তাই হবে বোধহয়,” নিপাট হেসে সুদীপ তাকান, “তা আপনি আজ এইখানে হঠাৎ? গোখেল রোডের কেসটার আজ হিয়ারিং ছিল। সেই সূত্রেই এসেছেন নাকি?” সুদীপের গলায় এতটুকুও সন্দেহের আভাস নেই। সুবর্ণ তবু বুঝতে পারে তাকে সাবধান হয়ে কথা বলতে হবে। সুদীপ সেনগুপ্ত সবটাই জানেন এবং বোঝেন, আর ঠিক সেকারণেই তার এই অযাচিত কৌতূহল। ঠিক মেলাতে পারে না সুবর্ণ। সে মৃদু হেসে জবাব দেয়, “হ্যাঁ, তাই তো শুনেছিলাম। কিন্তু আসতে বোধহয় এবারেও দেরি হয়ে গেল। হিয়ারিং তো শেষ হয়ে গেছে দেখছি।”

-“তাহলেও, আপনার সেই ক্যামেরাম্যানকে যেন কোর্টরুমের ভিতর একবার দেখলাম বলে মনে হল,” সুদীপ আরও চওড়া করে হাসেন, “তাছাড়া ঝানু সাংবাদিককে আপডেট পেতে গেলে কি আর সবসময়ে স্পটে হাজির থাকতে হয়? আপনিই বলুন?” সুবর্ণ বুঝতে পারে লোকটা অত্যন্ত সাবধানী এবং জটিল প্রকৃতির। কিন্তু নতুন করে সে কিছু বলার আগেই সুদীপ সেনগুপ্ত নিজে থেকেই বলে ওঠেন।

 

-“একটা আস্ত সোনার হার, আরও বেশ কিছু গয়না – সবকিছুই ঐ মালতীর কাজ বলে মনে হচ্ছে। অন্তত বেশ বড় একটা গয়নার লিস্ট আজ সকালে ওই মিত্রবাবুদের তরফে আমার হাতে এসেছে । এখন তো মেয়েটাকে ঝানু চোর বলে মনে হচ্ছে আমার। স্পষ্ট বলছি আপনাকে। কিছু মনে করবেন না,” ঠোঁট কুঁচকোন সুদীপ।

-“না না, মনে করব কেন?” সুবর্ণ জবাব দেয়, “কিন্তু আপনারা তাহলে ওই চুরিটা করেছে বলে মনে করছেন?”

-“তাছাড়া আর কি করব বলুন? কাজের লোকেদের মধ্যে ওই সবচেয়ে নতুন। বাকি সকলেই পুরনো এবং বিশ্বস্ত। তাছাড়া মিত্রবাবুরা তো আর নিজেরাই নিজেদের জিনিস ছল করে কোথাও লুকিয়ে রাখবেন না। আসলে গরীব মানেই আপনারা যতটা সাদাসিধে, নিরপরাধ ভাবেন, তেমনটা নয় সবসময়। বুঝলেন কি না?” মুখের হাসিটা ঝুলিয়ে রেখেই সুদীপ সেনগুপ্ত একটু এগিয়ে যান, “আসি তাহলে, কেমন? দেখুন, যদি আরও কোনও এ্যাঙ্গল-ট্যাঙ্গল, না কি যেন বলেন আপনারা, পান কোথাও!” তাচ্ছিল্যের সঙ্গে কথাগুলো বলতে বলতে সুদীপ সেনগুপ্ত ভিড়ে মিলিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঠিক সেসময়েই শেষ প্রশ্নটা করে বসে সুবর্ণ।

 

-“তাহলে কি পি.সি. না জে.সি. – কি চাইলেন আপনারা হিয়ারিংয়ে আজ?”

 

সুদীপ সেনগুপ্ত দাঁড়িয়ে যান। ঘুরে দাঁড়িয়ে সুবর্ণকে একবার আপাদমস্তক জরিপ করে নিতে চেষ্টা করেন। “পি.সি. গ্রান্টেড হয়েছে, ফর সেভেন ডেজ। বাচ্চাটাকে হোমে পাঠানো হবে। আর কিছু?” হঠাৎ কেমন ঠাণ্ডা গলায় জবাব দেন সুদীপ। সুবর্ণ শুকনো হাসে এবার। “না না, এইটুকুই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে,” সে হাত জোড় করে নমস্কার করে। সুদীপ সেনগুপ্ত সেই নমস্কার ফেরান না। কড়া চোখে আরেকবার তাকিয়ে তিনি গটগট করে হেঁটে ভিড়ে হারিয়ে যান। সুবর্ণ মনেমনে সুদীপের কথাগুলোকে সাজাতে চেষ্টা করে।

 

ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বাইরের ফুটপাথে টানা বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান। কোর্ট চত্বরে আসা অনেকেই সেগুলি থেকে টিফিন করে থাকেন। এর আগে দু’একবার ব্যাঙ্কশাল চত্বরে এলেও কোনওদিন সুবর্ণের খাবার প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু আজ তার কি মনে হল – সে সূরযের দিকে তাকায়। “খিদে খিদে পাচ্ছে না কেমন?” সূরয ঘাড় নাড়ে। মাস তিনেক হল ফটোগ্রাফার হিসেবে ‘ডেইলি রিভিউ’তে যোগ দিয়েছে সূরয। এরই মধ্যে সুবর্ণের সঙ্গে তার বেশ একটা বোঝাপড়া গড়ে উঠেছে। “তাহলে একটু কিছু খেয়ে নেওয়া যাক বরং,” সুবর্ণ সূরযকে প্রস্তাব দেয়। দুজনে মিলে শাকিবের দোকানের দিকে এগোয়।

 

এখানে শাকিব-চিন্টুর পরোটা-কাবাবের দোকান। কালো তাওয়ার জমিতে মুচমুচে হয়ে ওঠা বাদামী রঙ। পরোটাগুলো চিড়বিড় চিড়বিড় করে ওঠে কেমন। একপাশে স্টিলের পাত্রে সাজানো কাবাব, কোর্মা, পনির। শশাকুচি, পেঁয়াজকুচি – লোভনীয় মেজাজ। দুজনে দুটো প্লেটে খাবার নিয়ে বসে। খাওয়ার মাঝপথেই কেউ সুবর্ণের পাশে এসে দাঁড়ায়। সুবর্ণ না তাকিয়েই গম্ভীর ভাবে জিজ্ঞেস করে, “তখন ওইভাবে পালানোর কি সত্যিই খুব দরকার ছিল?” আগন্তুক উত্তর দেয় না। বরং সে পালটা জিজ্ঞেস করে, “আপনার হাতে লাগেনি তো তখন?” এইবারে সুবর্ণ মিহিরের দিকে তাকায়।

 

মিহিরের পরনে সেই এক পোশাক। যে পোশাকে গতকাল সুবর্ণেরা তাকে দেখেছিল। কেবল তার হাতে চায়ের ফ্লাস্কটুকুই এখন আর দেখা যাচ্ছে না। গোটানো ফুলপ্যান্ট এখন নামানো অবস্থায়। পরিবর্তন বলতে এই। সে আবারও জিজ্ঞেস করে, “লাগেনি তো আপনার?” সুবর্ণ ঘাড় নাড়ে। “তেমন কিছু না, এবারে আমার কথার জবাব দাও,” মিহির ঘাড় নীচু করে দাঁড়ায়। “তখন শোভনদা, সুনীলদারা বেরচ্ছিল সবাই। আপনার সাথে আমাকে দেখলে গণ্ডগোল হতে পারত।”

 

-“ওরা কারা?” সুবর্ণ জিজ্ঞেস করে।

-“কাউন্সিলর লক্ষণ মজুমদারের লোক,”

-“তিনি এসেছিলেন আজ?”

-“না, তবে সুনীলদা লক্ষণ মজুমদারের ডান হাত। তার আসা মানেই লক্ষণ মজুমদারের আসা।”

-“এইরকম ব্যাপার?”

-“হ্যাঁ এইরকম,”

-“তা মালতীর ব্যাপারে লক্ষণবাবুর এত আগ্রহের কারণ?”

-“আমি জানি না,”

-“তাহলে তুমি এসেছিলে কেন আজ?”

-“আমি,” মিহির আমতা আমতা করে এবার।

 

সুবর্ণের খাওয়া শেষ হয়ে এসেছে। সে তার হাতের প্লেটটা প্লাস্টিকের গামলায় নামিয়ে রাখতে রাখতে মিহিরের উদ্দেশ্যে বলে আবার, “বলতে পারো আমায়। আমি কাউকে বলব না।”

-“আপনি প্রেসের লোক। আপনারা ওরকম অনেক কথাই বলেন। তারপর বানিয়ে বানিয়ে কাগজে সব লিখে দেন,” মিহির হঠাৎ জবাব দেয়।

-“তাই নাকি?” একটু অবাক হয়ে সুবর্ণ জিজ্ঞেস করে, “কিন্তু আমরা তো নিজে থেকে কেউ কোনও কথা লিখতে বারণ করলে, লিখি না কোথাও।”

-“সে আমি জানি না। হয় বানিয়ে বানিয়ে কাগজে লিখে দেন, নয়তো আরও কাউকে গিয়ে বলে দেন। সাধারণ মানুষের কোনও সুবিধে হয় না। সত্যি কথাটা সহজ করে আপনারা লেখেন না।”

 

সুবর্ণ আরও অবাক হয়। “এসব কথা তোমাকে কে শেখাল মিহির?”

-“বলব না,” মিহির চুপ করে যায়।

-“যা মনে হচ্ছে, কাগজে আমরা লিখি – সেই বিষয়টা নিয়ে তোমার আপত্তি নেই। কিন্তু বানিয়ে বানিয়ে লেখাতেই আপত্তি তোমার।”

-“আপনি তাই ভেবে নিতে পারেন।” মিহির সত্যিই আড়ষ্ট হয়ে গেছে। সুবর্ণ সরাসরি তার চোখের দিকে তাকায়।

 

-“তুমি কি কিছু বলতে চাও মিহির?”

-“মালতীদি চুরি করেনি।”

-“শুধু এইটুকুই?”

-“হ্যাঁ”

-“মালতী যে নির্দোষ, তার কোনও প্রমাণ আছে তোমার কাছে?”

-“না। কিন্তু আমি জানি মালতীদি চুরি করেনি।”

-“তাহলে কে চুরি করেছে?’

-“কেউ না, মালতীদিকে ফাঁসাচ্ছে কেউ।”

-“কারা ফাঁসাচ্ছে?”

-“বলতে পারব না,”

-“লক্ষণ মজুমদার?”

-“আমি কিছু বলব না।”

-“তাহলে, আমাকে ঠেলে পালিয়েও আবার ফিরে এলে কেন?”

-“আপনি পড়ে যাচ্ছিলেন। লেগেছে কি না তাই জানতে এসেছিলাম।”

 

মিহিরের চোখদুটো কেমন গভীর অন্ধকারে গিয়ে মিশেছে। সুবর্ণ সেই অতলে তল খোঁজার চেষ্টা করে। বড় কঠিন সেই অন্ধকার। সুবর্ণ ভাবতে চায়, এই দেশের এমন অগুণতি পরিমাণে কিশোর-যুবক-তরুণ যারা, যারা শিক্ষিত, অল্পশিক্ষিত অথবা অন্য যে কোনও কাজে যারা পটু হয়েও, এখনও যারা বেকার, চোখের সামনে যারা তাদের আগের প্রজন্মকে অর্থনীতির জাঁতাকলে পাকসাট খেতে খেতে নিঃশেষ হয়ে যেতে দেখেছে, তাদের প্রত্যেকেরই চোখের দৃষ্টি কি সমানভাবে এতটাই গভীর? তাতে কি এতটাই অন্ধকার? সে এক মুহূর্ত কিছু ভাবতে চেষ্টা করে। তারপর কাঁধের ব্যাগে হাত ঢুকিয়ে একটা নোটবই আর পেন বের করে আনে। একটা পাতায় খসখস করে নিজের নাম আর ফোন নম্বর লিখে, পাতাটা ফরফর করে ছিঁড়ে নিয়ে সুবর্ণ মিহিরের দিকে এগিয়ে দেয়, “আমার ফোন নম্বর। যদি কখনও মনে হয় কিছু বলা দরকার, ফোন করতে পারো।” মিহির চারপাশ দেখে নিয়ে হাত বাড়িয়ে কাগজটা নেয়। নাম বা নম্বর না দেখেই সে চকিতে কাগজটা ভাঁজ করে শার্টের পকেটে ঢুকিয়ে নেয়। “আচ্ছা। আমি আসি এবার,” সে চলে যেতে চায়। তারপর ফিরে তাকিয়ে আরেকবার বলে, “দিদি, আপনাকে ধাক্কা দিতে চাইনি আমি। ক্ষমা করবেন।” সুবর্ণ কিছু বলার আগেই সে জনারণ্যে হারিয়ে যায়। সূরয সুবর্ণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।

 

সারারাস্তা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বোম্মাই আর কার্থিক থানার সামনে এসে দাঁড়ায়। গোটা চত্বরে ছোট বড় গর্তে জল জমে গিয়েছে। থানার বারান্দায় দুজন পুলিশ দাঁড়িয়ে ডিউটি দিচ্ছিল। বেঞ্চিতে আরও কয়েকজন সাধারণ মানুষ। বোম্মাই ভয়ে ভয়ে কার্থিকের দিকে তাকায়। কার্থিক মাথা নাড়ে। এই থানাতেই তাকে আসতে বলা হয়েছে। সে বোম্মাইয়ের হাত চেপে সাহস দেয়। এখন বৃষ্টির তোড় খানিক কমে এসেছে।

 

সুদীপ সেনগুপ্ত শোভন চট্টরাজের সঙ্গে কথা বলেন। কলকাতায় সন্ধ্যেরাত। নেতাজী ভবন মেট্রো স্টেশনের কাছেই ছোট এক চায়ের দোকান। তার ঠিক পিছনেই ফুটপাথের উপর তিনতলা রেস্ত্রো কাম বার। নিয়ন আলোর ঝলকানি অঢেল। সুদীপ সেনগুপ্ত চায়ে চুমুক দেন। “এ্যাঃ বড্ড কড়া করে ফেলেছে!” শোভন সঙ্গে সঙ্গে রাগে চমকিয়ে ওঠে। “তাই নাকি! এই শালা নরেশ। স্যরের চা’টা অবধি ঠিকঠাক বানাতে পারিস না?” সে দোকানির উপর চিৎকার করে ধমকিয়ে উঠতে চায়। সুদীপ হাত নেড়ে আশ্বস্ত করেন, “আহ, ছাড়ো ওসব। যা বললাম সেটা গিয়ে ওনাকে বলো এখন। পারলে আজই জানাবে,” সুদীপ এক চুমুকে চা শেষ করেন। রাস্তায় ভাঁড় ফেলেন। টুকরো টুকরো হয়ে সেই জঞ্জাল ছড়িয়ে যায়। সুদীপ সেনগুপ্ত পকেট থেকে ফোন বের করে দেখেন। কতগুলো মেসেজ এসেছে। তার মধ্যে একটিকে খুলে দেখতে গিয়েই তাঁর দৃষ্টি স্থির হয়ে যায়। এই কদিনেরই মধ্যে আরও একটিবার, মাথাটা অসম্ভব গরম হয়ে ওঠে হঠাৎ।

 

(চলবে)

 

আগের পর্বের ঠিকানা – https://nariswattwo.com/welcome/singlepost/%C2%A0the-siege-serialised-novelette-series-three-

লেখক : বিজ্ঞানী, প্রাবন্ধিক, কথাসাহিত্যিক 

ছবি : সংগৃহীত 

0 Comments

Post Comment